বাগেরহাটের পুর্ব-সুন্দরবনে স্যাটেলাইট লাগানো লবন পানির একটি কুমির চিতলমারী উপজেলার পুকুর থেকে উদ্ধার হয়েছে। শুক্রবার (১২ এপ্রিল) রাত ৮ টার দিকে উপজেলার কলাতলা ইউনিয়নের দক্ষিণ শৈলদাহ গ্রামের মোঃ হাসান শেখের মাছের ঘের থেকে কুমিরটি উদ্ধার করা হয়। স্থানীয়দের মাধ্যমে উদ্ধার করা কুমিরটি এদিন রাতেই চিতলমারী থানার ওসি মোঃ ইকরাম হোসেন খুলনা বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা তন্ময় আচার্য্যর কাছে হস্তান্তর করেন। বন বিভাগ জানায় সুন্দরবনের নদীতে স্যাটেলাইটযুক্ত করে অবমুক্ত করা চারটি কুমিরের মধ্যে ৩টি সুন্দরবনের মধ্যে ঘোরাঘুরি করলেও এ কুমিরটি সুন্দরবন থেকে বের হয়ে মোংলা, রামপাল, মোরেলগঞ্জের পানগুছি নদী, পিরোজপুরের কচা, শরনখোলার বলেশ^র নদী অতিক্রম করে মধুমতি নদী সংলগ্ন বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার কলাতলা ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার একটি পুকুরে অবস্থান করছিল। চিতলমারী থানার ওসি মোঃ ইকরাম হোসেন শনিবার সকালে বলেন সুন্দরবনের কুমির বিশেষজ্ঞরা গবেষণা কাজে কুমিরের গতিবিধি ও আচরণ জানাতে গত ১৬ মার্চ স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে লোনা পানির ৪টি কুমিরকে সুন্দরবনে অবমুক্ত করে। এদের মধ্যে একটি কুমির প্রায় শত কিলোমিটার পথ ঘুরে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার কলাতলা ইউনিয়নের দক্ষিণ শৈলদাহ গ্রামের মোঃ হাসান শেখের মাছের ঘেরে অবস্থান নেয়। বৃহস্পতিবার রাত থেকে অবস্থান করা কুমিরটি শুক্রবার রাতে উদ্ধার করে খুলনা বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা তন্ময় আচার্য্যর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, গত ১৩ মার্চ সর্বপ্রথম দুটি কুমির অবমুক্ত করা হয়েছিল। এরপর গত ১৬ মার্চ স্যাটেলাইট ট্যাগ বসিয়ে আরও একটি কুমিরের সঙ্গে এই কুমিরটিকেও অবমুক্ত করা হয় সুন্দরবনের হারবাড়িয়া পয়েন্টে। কুমিরের গায়ে স্যাটেলাইট ট্যাগ বসিয়ে নদীতে অবমুক্ত করার কাজটি যৌথভাবে করেছে বন বিভাগ ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন)। তাদের সহযোগিতা করছে জার্মান ফেডারেল মিনিস্ট্রি ফর ইকনোমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (জিআইজেড)। সুন্দরবনের কুমির কোথায়, কীভাবে বিচরণ করে তা নিয়ে এর আগে বিস্তারিত কোনো গবেষণা হয়নি। আমরা প্রতি বছরই সুন্দরবনে কুমিরের কৃত্রিম প্রজনন ঘটিয়ে অবমুক্ত করে থাকি। এ পর্যন্ত বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র থেকে প্রায় ২০০ কুমির সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়েছে। তবে তাদের গতিবিধি ও পরবর্তীতে তারা কোথায় যায় সেসব গবেষণা কখনও করা হয়নি। সে কারণেই স্যাটেলাইট ট্যাগ বসিয়ে এই গবেষণাটি করা হচ্ছে।#
ad