বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলায় ২০২৪ সালে জীবনযুদ্ধে জয়ী পাঁচ জন সংগ্রামী নারীকে শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা দিয়েছে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়, কচুয়া বাগেরহাট। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মনোয়ারা খানম জানান পাঁচ ক্যাটাগরিতে প্রতিবছর পাঁচজন নারীকে জয়িতা সম্মানে ভূষিত করা হয়। সমাজের নানা প্রতিকূলতা নির্যাতন পেরিয়ে যারা সরকারের জয়িতা অন্বেষণ বাংলাদেশ শীর্ষক কর্মসূচির মাধ্যমে এ সম্মাননা অর্জন করেন। ৫ ক্যাটাগরিতে যারা ২০২৪ সালে জয়িতা হয়েছেন তাদের সংক্ষিপ্ত বিবরণী তুলে ধরা হলো ।
হেলেনা বেগম:
অর্থনৈতিক নারী ক্যাটাগরিতে সাফল্য অর্জনকারী সম্মাননা পান হেলেনা বেগম, কচুয়া গোপালপুর। তিনি খুব অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে সেলাই মেশিনের কাজ করে পাঁচ সন্তানকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করেছেন এবং স্বাবলম্বী করতে পেরেছেন।
শিরীন সুলতানা:
শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী ক্যাটাগরিতে সম্মাননা পান শিরীন সুলতানা, কচুয়া সদর,কচুয়া। তিনি দিনমজুর বাবার সংসারে অত্যন্ত কষ্ট করে কষ্ট করে লেখাপড়া করেছেন। একটু বড় হওয়ার পর টিউশনি করে পড়াশুনা চালিয়েছেন। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করে সহকারী শিক্ষক হিসেবে সরকারি প্রাইমারি স্কুলে চাকুরি করছেন এবং প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।
রোকেয়া বেগম:
সফল জননী নারী ক্যাটাগরিতে জয়িতা নির্বাচিত হন রোকেয়া বেগম, কচুয়া,সদর কচুয়া। তিনি নকশি কাঁথার কাজ করে তার তিন সন্তানকে শিক্ষিত করেছেন। তারা প্রত্যেকেই সমাজে সফলভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তার প্রথম ছেলে ব্যাংকে দ্বিতীয় ছেলে হিসাব রক্ষণ অফিসে এবং তৃতীয় ছেলে মোবাইল সার্ভিসিং এর মোবাইল ব্যবসা করেন।
ফাতেমা আক্তার কলি:
নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করেছেন যে নারী ক্যাটাগরী জয়িতা সম্মাননা পেয়েছেন তিনি ফাতেমা আক্তার কলি কচুয়া,সদর কচুয়া।গরিব পরিবারে জন্ম হওয়ায় অল্প বয়সেই তার বিয়ে হয়ে যায়। লেখাপাড়াও করতে পারেননি তিনি। বিয়ের পরে স্বামী কর্তৃক অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হন। এক পর্যায়ে তার একমাত্র মেয়ে নিয়ে স্বামীর সংসার ছেড়ে সেলাই প্রশিক্ষণের কাজ শিখে স্বাবলম্বী হয়েছেন।
শাহিদা আক্তার:
সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন যে নারী ক্যাটাগরীতে জয়িতা সম্মাননা পান শাহিদা আক্তার,গ্রাম- খলিশাখালী, শোলারকোলা, কচুয়া, বাগেরহাট। সমাজের বিভিন্ন প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তিনি বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ, যৌতুক নিরোধ, মাদক নির্মূলসহ বিভিন্ন সমাজসেবা মূলক কাজ করে যাচ্ছেন। সরকারী এবং বেসরকারী সংগঠনের সাথে সমন্বয় করে কাজ করছেন। সিডো সনদে খুলনা বিভাগের, প্রতিনিধি হিসাবে তিনি স্বাক্ষর করেছেন। তিনি শিশুদের জন্য একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন। সমাজের নির্যাতিত, অবহেলিত নারীদের পাশে দাড়িয়েছেন। আজীবন কাজ করে যাবেন সমাজ উন্নয়নে এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি এবং সে লক্ষ্যে কাজও করে যাচ্ছেন।