December 23, 2024, 2:25 pm
নোটিশ :
প্রকাশক ও সম্পাদক : মাসুম হাওলাদার।   বার্তা সম্পাদক : তানভীর সোহেল।     প্রধান কার্যালয় :  রেল রোড (কৃষি ব্যাংকের সামনে) বাগেরহাট। ইমেইল : press24masum@gmail.com

১০০ টাকায়ও পাওয়া যায় গরুর মাংস

ডেস্ক 359 বার
আপডেট সময় : রবিবার, জানুয়ারি ২৮, ২০২৪

পুরান ঢাকার কশাইটোলির ক্যাপিঘোস স্ট্রিটে শনিবার সকাল ৯টা, বিসমিল্লাহ খাশি-গরুর মাংস সাপ্লাই দোকানে বেশ ভিড় দেখা যায়। কাছে গিয়েই দেখা গেল এক ব্যক্তি ছোট একটি পলিথিনের ব্যাগে করে গরুর মাংস নিয়ে যাচ্ছেন। এর আগে এত অল্প পরিমান গরুর মাংস কোনো দোকান থেকে কাউকে কিনতে দেখা যায়নি। তাই আগ বাড়িয়ে তার সঙ্গে কথা হয় ঢাকা টাইমসের এই প্রতিবেদকের।

শফিকুল নামে এই ব্যক্তি পুরান ঢাকার একটি কারখানায় চাকরি করেন। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে তার ছোট ছেলে গরুর মাংস খেতে চাইছে। যে টাকা আয়, সেই হিসেবে বর্তমান বাজারে গরুর মাংস কেনা খুবই কষ্টসাধ্য শফিকুলের। তবে কশাইটলির নয়নের এই মাংসের দোকান তার ছেলের মাংস খাওয়ার শখ পূরণ করতে যাচ্ছে বলেও জানান শফিকুল।

এই ক্রেতা জানান, নয়নের মাংসের দোকান থেকে তিনি ১৬২ টাকা দিয়ে ২৫০ গ্রাম গরুর মাংস কিনেছেন। এছাড়াও এই দোকানে চাইলে কেউ ১০০ টাকা দিয়েও সমমূল্যের গরুর মাংস কিনতে পারছেন। এছাড়াও এখানে বাজার দরের তুলনায় খুব অল্প দামে গরুর মাংস বিক্রি করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

রাজধানীর কয়েকটি বাজারের গরুর মাংসের দোকান ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ মাংস ব্যবসায়ী ৭০০ টাকার বেশি দরে মাংস বিক্রি করছেন। কেউ কেউ আবার ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি দরেও বিক্রি করছেন। এসব দোকান থেকে সাধ্য অনুযায়ী যে কেউ তার চাহিদা অনুযায়ী অল্প পরিমাণে মাংস কিনতে পারছেন না।

হঠাৎ মাংস ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট গরুর মাংসের দাম বৃদ্ধিতে অনেক নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবার গরুর মাংসের চাহিদা পূরণ করতে পারছেন না। মাংসের দাম সাধ্যের বাইরে থাকায় অনেকেই বর্তমানে মাংস কিনতে পারছেন না। তবে বাজারের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে গিয়েই রাজধানীতে কয়েকজন গরুর মাংস ব্যবসায়ী চলতি দামের চেয়ে কমে গরুর মাংস বিক্রি করে আসছে।

পুরান ঢাকার বিসমিল্লাহ খাশি-গরুর মাংসের দোকানটি প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত খোলা থাকে। দীর্ঘ পাঁচ মাস যাবত এই দোকানটিতে হাড়সহ মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকা কেজি দরে। এছাড়াও পছন্দ বা বাছাইকৃত গরুর মাংস ৬৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এই দোকানটিতে বেশ ভিড় লক্ষ করা যায়। দোকানটিতে দৈনিক ২০-২৫ জন কর্মচারী কর্মরত আছেন।

দোকানটির সত্ত্বাধিকারী মো. নয়ন ঢাকা টাইমসকে বলেন, আমার বাবা ও দাদারাও মাংস ব্যবসার পেশার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সেই সূত্র ধরেই আমি ১৬ বছর যাবত মাংস ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আছি। কশাইটলির ক্যাপিঘোস স্ট্রিটে বিসমিল্লাহ খাশি-গরুর মাংসের দোকানটির বয়স ১২ বছর। ১০ হাজার টাকা ভাড়ায় এই দোকানটি নেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন ২০-২৫টি গরু জবাই করে মাংস বিক্রি করা হয় এখানে। ঢাকার বিভিন্ন হাট থেকে গরুগুলো নিয়ে আসা হয়। জবাইর পূর্বে প্রথমে গরুগুলোর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। এরপর জবাই করে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়। প্রতি রবিবার এখানে মহিষ জবাই করে মাংস বিক্রি করা হয়।

নয়ন বলেন, আমার এই দোকান থেকে প্রতিদিন ১০জন অসহায় দরিদ্র মানুষের মাঝে ৫০০ গ্রাম করে বিনামূল্যে মাংস বিতরণ করা হয়। এছাড়াও অনেক গরীব মানুষ আছেন যারা এক কেজি মাংস কেনার সামর্থ নেই। তাই আমার এই দোকানে চাইলেই যে কেউ তার সামর্থ অনুযায়ী সমপরিমান অর্থের মাংস কিনতে পারবেন। চাইলে কেউ ৫৮০ বা ৬৫০ টাকা দিয়ে এক কেজি মাংস না কিনে ১০০ টাকার মাংস এখান থেকে কিনতে পারবেন।

দীর্ঘ পাঁচ মাস যাবত এই একই নিয়মে তার ব্যবসা চলছে জানিয়ে নয়ন বলেন, ‘তবে আমি ভাইরাল হওয়ার জন্য দাম কমাইনি। সবাই যেন মাংসের চাহিদা পূরণ করতে পারে তাই আমি কম লাভে মাংস বিক্রি করছি। আমার দোকানে কেজিপ্রতি মাংস বিক্রিতে লাভ কম হলেও বিক্রি অনেক বেশি হচ্ছে।’

বর্তমান বাজার দরের চেয়ে কীভাবে এত কম দামে মাংস বিক্রি করছেন- জানতে চাইলে নয়ন বলেন, ‘আমরা চাই বিক্রি বেশি হোক, তাতে লাভ কম হোক সমস্যা নাই। কম লাভে আমরা বেশি বিক্রি করতে পারছি। আর বাজারে কিছু সিন্ডিকেট আছে, তারা বেশি লাভ করছে, তবে তাদের বিক্রি কম। অতিরিক্ত লাভের জন্যই তারা মাংস বেশি দামে বিক্রি করে আসছেন। যদি আমাদের মতো আরও কয়েকজন মাংস ব্যবসায়ী কম লাভে মাংস বিক্রি করতেন তাহলে এই সিন্ডিকেট ভেঙে যেত।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By ThemesDealer.Com