সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪৯ পূর্বাহ্ন
Notice :

গণপরিবহন ব্যবস্থা পাল্টে দিচ্ছে মেট্রোরেল

নিজস্ব প্রতিবেদক : / ৩৪৯ বার
আপডেট সময় : সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪৯ পূর্বাহ্ন

বেসরকারি চাকুরীজীবী মিনহাজ সাচ্ছন্দে প্রতিদিন অফিস করছেন মতিঝিলে। আবার অফিস শেষ করে বাড়ি ফিরছেন বেশ তাড়াতাড়ি। গত ১৫ বছর ধরে কর্মরত মিনহাজ কোনদিন ৮টার আগে বাসায় পৌঁছাননি। তবে এখন তিনি সন্ধায় ৬টা নাগাদ মিরপুরের বাসায় ফিরে যান। তার মতে, এটি সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র মেট্রোরেলের কারনে। ঢাকার গনপরিবহণ নিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতার অবসান করতে চলেছে মেট্রোরেল।

সকাল-রাত অবধি পুরোদমে মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর থেকেই চাপ বেড়েছে যাত্রীর। উত্তরা দিয়াবাড়ী থেকে কিংবা মিরপুর থেকে মতিঝিল কিংবা উভয় পথেই যাত্রী চলাচল করছে উপচে পড়া ভিড়ের মধ্যেই। দীর্ঘ সময় লাইনে দাড়িয়েও স্বস্তিতে চলাচল করছেন সাধারণ মানুষ। আর তাতে সময় এবং অর্থ দুইই বেঁচে যাচ্ছে।

২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে গত বছরের ৪ নভেম্বর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করেন তিনি। এরপর গত ৩১ ডিসেম্বর সর্বশেষ মেট্রোরেলের শাহবাগ ও কারওয়ানবাজার স্টেশন চালু করা হয়। আর গত ২০ জানুয়ারি থেকে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে মতিঝিল অংশে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলাচল করছে মেট্রোরেল।

বর্তমানে ১৬টি স্টেশনে চলাচল করছে মেট্রোরেল এগুলো হচ্ছে-উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয় এবং মতিঝিল।

সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মেট্রোরেলে সহজে যাতায়াতের জন্য গত তিন দিনে প্রায় ২০ হাজার এমআরটি পাস কিনেছেন যাত্রীরা। আর যাত্রীদের ভিড় কমাতে মেট্রোরেলের চলাচলের মধ্যবর্তী সময় কমানোর পাশাপাশি নতুন বগি বাড়ানোরও চিন্তা করছে কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের কোম্পানি সচিব (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ আবদুর রউফ জানিয়েছেন, , গত তিন দিনে আমাদের এমআরটি পাস কিনেছেন প্রায় ২০ হাজার লোক। ভিড় কমাতে আমাদের বগি বাড়ানোর চিন্তাও আছে। যে সিস্টেমে আছে সেখানে প্রত্যেক কোচে আরও দুটি বগি যুক্ত করতে পারবো। এছাড়া নতুন কোচ প্রয়োজন হলে ভাবা হবে। পাশাপাশি আমরা সার্ভে করে দেখবো মেট্রো ট্রেন চলাচলের মধ্যবর্তী সময়টা কতটা কমিয়ে আনা যায়।

অন্যদিকে উত্তরা থেকে মতিঝিল সকাল থেকে রাত ৮টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু থাকায় যাত্রী সংকটে লোকসান গুনছেন বলে দাবি করেছেন বাস মালিকরা। মিরপুর থেকে মতিঝিল রুটে গত কয়েকদিনে যাত্রী অর্ধেক হয়ে গেছে বলে জানান তারা। তাই এখন এসব বাস অন্য রুটে চালানোর চিন্তা করছে বাস মালিকরা।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী আসাদ জানান, আমার থাকি পল্লবী এলাকায়, অফিস পল্টনে। আগে বাসা থেকে বের হয়ে অফিসে যেতে অন্তত দুই ঘণ্টা সময় হাতে নিয়ে বের হতাম। এখন মেট্রোরেলে ২০ মিনিটের মধ্যে অফিসে চলে যেতে পারি। আগের মতো বাসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে বসে থাকতে হয় না। তাই আগের মতো বাসে উঠা হয় না।

বিহঙ্গ পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির উদ্দিন খোকন জানান, ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে বাসের মান আগের থেকে বাড়াতে হবে। কারণ মেট্রোরেলে চলাচল করলেও কিছু যাত্রী থাকবে যারা বাস ব্যবহার করবে। তাদের কথা চিন্তা করে আমরা বাসের মান বাড়াব। তাহলে অনেক যাত্রী পাওয়া যাবে।

মতিঝিল-মিরপুর-১২ রুটে ৩৫টি বাস চলাচল করে বিকল্প পরিবহনের। বিকল্প গত নভেম্বর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত রুট সম্প্রসারণ করে এই আশায় যে মেট্রোরেলের কারনে তাদের ব্যবসায় যাতে কোনো প্রভাব না পড়ে। গতকাল মঙ্গলবার কোম্পানিটির মাত্র ২৭টি বাস চলাচল করে, বাকিগুলো পল্লবী এলাকায় পার্কিং করে রাখা হয়।

এছাড়া যাত্রী কমে যাওয়ায় সম্প্রতি মিরপুর সুপার লিংক বাস মালিকরা এই রুটে ৫০টির পরিবর্তে ৩০টি বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) জানিয়েছে, প্রতিদিন প্রায় আড়াই লাখ যাত্রী এই পরিষেবা নিচ্ছেন। সকালে পিক আওয়ারে প্রতিটি ট্রেনে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৮০০-২০০০ জন যাতায়াত করে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০  
এক ক্লিকে বিভাগের খবর