ঐতিহাসিক ২০ এপ্রিল স্মরণে
১৯৭১ সালের শরণার্থীদের ক্লান্তি ও দুর্ভোগ দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে নওগাঁয় প্রতীকী পদযাত্রা অনুষ্ঠিত।
. নওগাঁয় সামাজিক সংগঠন একুশে পরিষদ নওগাঁ এর উদ্যোগে ১৯৭১ সালের অসহায় শরণার্থীদের দুর্ভোগ স্মরণে 'রোড টু বালুরঘাট' প্রতীকী পদযাত্রা অনষ্ঠিত হয়েছে। পদযাত্রায় ফুটে উঠেছে নওগাঁর রোড ধরে ভারতে পাড়ি দেওয়া শরণার্থীদের দুর্দশার চিত্র। ঐতিহাসিক ২০ এপ্রিলের এই দিনে ‘রোড টু বালুরঘাট' স্মরণ করলো নওগাঁবাসী। প্রায় ৬০ মিনিটে ৩ কিলোমিটার পদযাত্রায় যুদ্ধকালীন নওগাঁ রোডের শরণার্থীদের যুদ্ধ বিভীষিকা ও অবর্ণনীয় দুর্দশা তুলে ধরা হয় এই প্রতীকী পদযাত্রার মাধ্যমে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) বেলা ১১টায় মুক্তিযুদ্ধের ৫৩ বছর পর প্রতীকী পদযাত্রায় পাঁচ শতাধিক বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ নওগাঁ রোডে শরণার্থীদের অবর্ণনীয় দুর্দশা ও যুদ্ধচিত্র ঘটনাপ্রবাহ ফুটিয়ে তোলেন। শহরের তাজের মোড় শহিদ মিনার পাদদেশ থেকে এই পদযাত্রা শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল মুক্ত মঞ্চ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। ইতিহাসের কালো অধ্যায়ময় এই পদযাত্রায় একমাত্র সন্তানের অনাহারী তাকে নিয়ে হেঁটে চলার দৃশ্যসহ নানা দিক ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই আয়োজনে।
একুশে পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেড ডি এম আব্দুল বারী এর সভাপতিত্বে শরণার্থীদের প্রতীকী পদযাত্রা অংশগ্রহণ করেন, উপদেষ্টা ডাক্তার মইনুল হক দুলদুল, সাবেক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম খান, সিদ্দিকুর রহমান, অধ্যক্ষ বিন আলী পিন্টু, অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ, সাইমা ফেরদৌসী, নাইস পারভীন, বিষ্ণু কুমার দেবনাথ, গুলশানারা সহ প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের বর্বরোচিত অত্যাচার-নিপীড়ন ও গণহত্যা থেকে বাঁচতে যুদ্ধের শুরু থেকে বিশেষ করে ২০ এপ্রিল এই দিনে পায়ে হেঁটে নওগাঁর সড়ক পথে হাজার হাজার মানুষ শরণার্থী হিসেবে ভারতের বালুরঘাটে আশ্রয় নেয়। চলার পথে সেই সময় পাকহানাদার ও দোশরদের আক্রমনে অনেকেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। সেই সব শরণার্থীদের ক্লান্তি ও দুর্ভোগ স্মরণে একুশে পরিষদ নওগাঁ 'রোড টু বালুরঘাট' প্রতীকী পদযাত্রার এই আয়োজন করে। যা সময় উপযোগি একটি আয়োজন। এমন আয়োজন সারাদেশে হওয়া দরকার।
একুশে পরিষদের সভাপতি ডি এম আব্দুল বারী বলেন, ১৯৭১ সালের ইতিহাস অনেকেই ভুলে গেছি। ৫৩ বছরের আগে কি ঘটেছিল। লক্ষ লক্ষ মানুষ নওগাঁ শহরের উপর দিয়ে দেশ ছেড়েছিল দেশকে মুক্ত করার জন্য। চলার পথে সেই সময় পাকহানাদার ও দোশরদের আক্রমনে অনেকেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। নওগাঁর মূল ইতিহাস ও ঐতিহ্যবাহী এই জেলার সকল তরুণ প্রজন্ম ও শিক্ষার্থীদের জানানোর উদ্দেশ্যেই এই আয়োজনটি করা হয়েছে। তারা জানুক যে ৫৩ বছর আগে এই জেলায় কি হয়েছিল।