মানবসৃষ্ট সুন্দরবনের পরিকল্পিত অগ্নিকান্ড বন্ধে বনবিভাগসহ সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবে। সুন্দরবন সংরক্ষিত বনাঞ্চল হলেও আমুরবুনিয়া টহল ফাঁড়ি অঞ্চলে চোরা শিকারীসহ মানুষের অবাধ যাতায়াত রয়েছে। গত ২৪ বছরে সুন্দরবনে ২৬ বার আগুন লেগে সরকারি হিসেবে প্রায় ৭৫ একর বনভূমি ধ্বংস হয়েছে। মুনাফালোভী মাছ ব্যবসায়ী ও অসৎ বনকর্মর্তার যোগসাজশে এবং অদক্ষ মৌয়ালদের কারনে সুন্দরবনে বারে বারে আগুন লাগছে। এর দায়ভার বনবিভাগ কোন ভাবেই এড়াতে পারেনা। পরিবেশকর্মী, সংবাদকর্মী, গবেষক ও বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা এবং অতীতে সংগঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন না করার কারনেই সুন্দরবনের আমুরবুনিয়া এলাকায় চার বছর পরে আবারো অগ্নিকান্ড সংগঠিত হলো। ৫ মে রবিবার সকালে সুন্দরবনে পরিকল্পিত অগ্নিকান্ড বন্ধের দাবিতে আমুরবুনিয়া টহল ফাঁড়ির সামনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), সুন্দরবন রক্ষায় আমরা ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপারের আয়োজনে মানববন্ধনে বক্তারা একথা বলেন।
রবিবার সকাল ১০টায় মানববন্ধন চলাকালে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক, সুন্দরবন রক্ষায় আমরা’র সমন্বয়কারী পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মোঃ নূর আলম শেখ। মানববন্ধন চলাকালে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ভলান্টিয়ার শেখ রাসেল, স্থানীয় বাপা নেতা ওমর ফারুক, সুন্দরবন রক্ষায় আমরা’র লাকী বেগম, শহিদুল ফারাজী, মাসুদ প্রমূখ। মানববন্ধন চলাকালে সমাবেশে বক্তারা বলেন আমুরবুনিয়া এলাকায় দুইদিন আগে থেকে আগুন জ¦ললেও বনবিভাগের উদাসীনতায় আগুন নেভানোর কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। আগুনে প্রায় ৩/৪ একর বনভূমি পুড়ে গেছে। বক্তারা বলেন বাংলাদেশের ফুঁসফুঁস সুন্দরবন রক্ষায় বনবিভাগ, স্থানীয় জনগণ, সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক হ্তে হবে। সুন্দরবনের মধ্যে মুনাফালোভী ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। নীতি-নির্ধারনী মহলের কাছে সুন্দরবন আজো গুরুত্বহীন। সুন্দরবন অক্সিজেন ও কার্বনের এক সুবিশাল ভান্ডার। প্রাণীর জীবন ধারক অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইডের আদান-প্রদানের মাধ্যমে সুন্দরবন স্থানীয় জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও সুন্দরবন রক্ষায় আমরা’র সমন্বয়কারী পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মোঃ নূর আলম শেখ বন বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির সমালোচনা করে বলেন কেবলমাত্র বন বিভাগের কর্মকর্তাদের দিয়ে তদন্ত কমিটি করলে সুন্দরবনের আমুরবুনিয়ার অগ্নিকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবেনা। তাই এশিয়ার ফুঁসফুঁস সুন্দরবনের মানবসৃষ্ট অগ্নিকান্ডের রহস্য উন্মোচন এবং এই ধরনের জঘন্য কর্মকান্ডে বন্ধে বনবিভাগ ও অনান্য আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্য, পরিবেশকর্মী, সুন্দরবন গবেষক ও বিশেষজ্ঞ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।#