কোটা সংস্কারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে সরকার একমত বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, কোটা সংস্কারের পক্ষে সরকার।
আজ বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে সংসদ ভবনে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের সামনে ব্রিফ করার সময় এ কথা বলেন তিনি।
আইনমন্ত্রী বলেন, কোটা সংস্কারের পক্ষে নীতিগতভাবে ঐক্যমত পোষণ করেছে সরকার। এজন্য শিক্ষার্থীরা যখনই বসবে আমরা রাজি আছি। আজকে বসলেও আমরা বসব।”
তিনি বলেন, আমি অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেছি এ সংক্রান্ত মামলার শুনানির জন্য আগামী রোববার আদালতে আপিল করতে, যেন শুনানি এগিয়ে আনা যায়।
এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, আন্দোলনকারীদের আলোচনার প্রস্তাবকে স্বাগত জানায় সরকার। আমাকে ও শিক্ষামন্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ওরা চাইলে আমরা আজকেই আলোচনায় বসতে রাজি।
আন্দোলন প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে শিক্ষার্থীদের আইনমন্ত্রী বলেন, পিতৃতূল্য হিসেবে আমি অনুরোধ করছি, আহ্বান জানাচ্ছি আপনারা আন্দোলন থেকে সরে আসেন।
কোটা সংস্কার বিষয়ে আপনারা একমত কি না— সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আমরা কোটা সংস্কারের ব্যাপারে নীতিগতভাবে একমত।’
আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের কোটাপদ্ধতি বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার। সরকারের এই কোটা বাতিলের পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট করেন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর রুল দেন হাইকোর্ট। চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৫ জুন রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট।
পরে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন চেম্বার আদালত হয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে ৪ জুলাই। রিট আবেদনকারীপক্ষ সময় চেয়ে আরজি জানালে সেদিন আপিল বিভাগ শুনানি পিছিয়ে দেন।”
পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলা হয়। এ অবস্থায় কোটা পুনর্বহালসংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে গত ৯ জুলাই আবেদন করেন দুই শিক্ষার্থী।
দুই শিক্ষার্থী ও রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন শুনানির জন্য ১০ জুলাই আপিল বিভাগে ওঠে। শুনানি শেষে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটার বিষয়ে পক্ষগুলোকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। কিছু পর্যবেক্ষণ, নির্দেশনাসহ এ আদেশ দেয়া হয়। এই স্থিতাবস্থা চার সপ্তাহের জন্য উল্লেখ করে আপিল বিভাগ আগামী ৭ আগস্ট পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।”
আন্দোলনকারীরা আদালতের আদেশ মানেন না জানিয়ে নির্বাহী বিভাগের আদেশের দিকে তাকিয়ে বিক্ষোভ-সমাবেশ চালিয়ে আসছেন। এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়। উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে দুপুরে ব্রিফিং করেন আইনমন্ত্রী।’smkb