শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:০৯ অপরাহ্ন
Notice :

বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ এ দেশ-বিদেশের পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়।

স্টাফ রিপোর্টার: / ৫৬ বার
আপডেট সময় : শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:০৯ অপরাহ্ন

  জেলার ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ ক্যাম্পাসকে ঘিরে ঈদের ছুটিতে দেশি বিদেশি পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্যণীয়। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার বেশি দর্শনার্থী  এসেছেন।কয়েক বছরের রেকর্ড তিনদিনে ভঙ করেছে। 

ঈদের আনন্দ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাজারো মানুষ  পরিবার পরিজন নিয়ে ভিড় করছেন বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী ষাটগুম্বজ মসজিদ,তৎসংলগ্ন বিশাল ঘোড়াদিঘি,ষাটগম্বুজ যাদুঘর যেখানে থরে থরে সাজানো রয়েছে মহান আউলিয়া হযরত খানজাহান আলির টাকশালের তাম্রমুদ্রা, মাটির ব্যবহৃত বাসন,  তৈজষপত্র, রয়েছে খানজাহান আলী দিঘির মমিকৃত কালাপাহাড় কুমির যাদুঘরের বিশেষ আকর্ষণ বিভিন্ন স্মৃতিচিহ্ন, মানচিত্র এবং লিপিবদ্ধ ইতিহাস পাশেই খানজাহানের বসতভিটা খনন কালে উদ্ধারকৃত অনেক মূল্যবান দ্রব্যাদির সমাহারে সমৃদ্ধ আজকের ষাটগুম্বজ যাদুঘর।ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে অবকাশ যাপনে রাজশাহী, খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, পিরোজপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী, ঢাকা, চট্রগ্রামসহ,দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের।কুষ্টিয়া থেকে আসা শাহীন হাওলাদার বলেন ষাটগম্বুজ তুলনা শুধু ষাটগঞ্জ দিয়েই হয় এখানে ঘোড়ার মজাটা আলাদায় বুঝিয়ে বলা যাবে না অতুলনীয়।
নড়াইল থেকে এক দর্শনার্থী তার পরিবারসহ এসেছেন এ প্রত্নতাত্ত্বিক কারুকার্য নিদর্শন খচিত ক্যাম্পাসের দৃশ্য অবলোকন করতে।তিনি জানালেন, সত্যিই মুগ্ধ আল্লাহর এমন অপূর্ব সৃষ্টি। সাবিনা ইয়াছমিন এসেছেন যশোর থেকে গাড়িভর্তি সেখানকার স্কুল শিক্ষার্থীদের নিয়ে, মহা আনন্দে ছবি তুলছেন বললেন এখানে আসা খুবই সার্থক হয়েছে দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য শুধু বইয়ের পাতায় নয় বাস্তবে দেখা জ্ঞ্যান অর্জন ও মেধার বিকাশ ঘটে।এমনিভাবে অনেক দর্শক সত্যিই অসাধারণ মনোমুগ্ধকর নান্দনিক কারুকাজ খচিত দৃশ্য দেখে খুবই মুগ্ধ।

ঈদ ও পরবর্তী মোট ৩ দিনে ২০ হাজার ৪ শ দর্শক সমাগম ঘটেছে যেটি অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ করেছে। অনেকেই জামাতের নামাজসহ নফল নামাজ আদায় করতে পেরে নিজেদের খুবই সৌভাগ্যবান মনে করছেন।ঢাকা থেকে আসা হাজি মিজান তার প্রতিক্রিয়ায় জানালেন,এখানে নামাজ আদায় করা এবং ক্যাম্পাসে প্রবেশের পর মনে হয়েছে এ যেন এক পরম স্বর্গীয় প্রেরণা  ব্যাথিত মনকে আন্দোলিত আর প্রশান্তিতে ভরিয়ে তুলেছে।

৩ দিনে জার্মান, ইংল্যান্ড, জাপানসহ বেশ কয়েকটি দেশ থেকে ৩০ জন দর্শনার্থী এসেছেন বলে জানান, এখানকার যাদুঘরের কাস্টোডিয়ান মুহাম্মাদ জায়েদ।এ সময়ে তাদের ছুটি ভোগ না করে আগত দর্শনার্থীদের স্বাগত এবং সহায়তার জন্য সকল কর্মচারী নিরলস ভাবে কাজ করছেন।ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা রক্ষী রয়েছে।

পুরো ক্যম্পাস সারাদিন ঘুরতে প্রতিজন দর্শনার্থীর জন্য ৩০ টাকা,মাধ্যমিক শিক্ষার্থীর জন্য ১০ টাকা ও বিদেশি পর্যটকের জন্য ৫ শত টাকা ও সার্কভুক্ত দেশগুলোর পর্যটকদের জন্য  ২ শ টাকা টিকিট মূল্য নির্ধারিত বেশ আগে থেকেই।কাস্টোডিয়ান মুহাম্মাদ জায়েদ বলেন ,বাগেরহাটকে পুরো পর্যটন এলাকায় পরিণত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ করে চলেছে।তিনি জানান পুরো বাগেরহাটকে বলা হয় মসজিদের শহর,দিঘির শহর। রয়েছে এক গুম্বজ, নয় গুম্বজ, দশগুম্বজ, চুনাখোলা, সিংগাইর মসজিদসহ আরও বেশ কটি মসজিদ,রয়েছে পচা দিঘি,একতার খা দিঘি, খানজাহান আলী দিঘি,ঘোড়া দিঘি, পাটরপাড়া দিঘিসহ অসংখ্য আউলিয়ার মাজার।ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক নগরী বাগেরহাটের এ সব নিদর্শন দেখতে ম্যারথন ভাবে দেখতে পারলেও ২৪ ঘন্টা সময়  লেগে যাবে।

বেশিরভাগ দর্শনার্থী তাদের গাড়িতে ড্যাগ, জ্বালানি, বাজার নিয়ে এসেছেন।  আশপাশে রান্না করার ব্যাবস্থায় খুব স্বাচ্ছন্দ্যে খাবার খাচ্ছেন, অনেকেই নিকটবর্তী হোটেলে সাদা সোনা হিসেবে খ্যাত বাগদা চিংড়ি খুব শখ করে খাচ্ছেন, এছাড়া গরুর গোশত,আলুরদম,চালতে দিয়ে ডাল রান্না,

থাকা খাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত আবাসিক হোটেল রয়েছে। পাশেই খুলনা মহানগরী সেখানেও ছোট বড় অভিজাত হোটেল আছেে। হাজারো মানুষের মিলন মেলা দেখতে ছুটে আসেন নিকটবর্তী মানুষ । অত্যন্ত সুশৃংখল  পরিবেশ, শিশুদের চিত্তবিনোদনে দোলনা,সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে নিচে নামার অপূর্ব দৃশ্য সকলেরই নজর কাটে।ক্যাম্পাস জুড়ে সৌন্দর্য ছড়াতে বাহারি ফুলের সমাহার আর সবুজের নিলিমায় নিজেকে যেন প্রকৃতির মাঝে কিছুক্ষণ হারিয়ে যাওয়া সত্যিই অসাধারণ।
শুক্রবার ক্যাম্পাসের চারিদিক ঘুরে ঘুরে দেখেন প্রচুর দর্শক সমাগম যা অন্যান্য বছরের তুলনায় অধিক। সকাল থেকে দুপুর  অবধি দর্শক কৌতুহল হয়ে প্রাণভরে দেখছেন ঐতিহাসিক নিদর্শন গুলো।হাফিয়ে উঠলে দিঘির এ প্রান্ত থেকে অপরপ্রান্ত পর্যন্ত সড়ক ধরে হেঁটে হেঁটে বিশ্রাম নিতে পারছেন বড় বড় আধুনিক ডিজাইনের বাংলো আর  বেঞ্চি ।সেখানে বসেই দিঘির অপরুপ প্রাকৃতিক দৃশ্য সাথে পশ্চিম দিগন্তে সূর্য অস্তমিত হবার দৃশ্য দেখাটা চরম উপভোগ্য।দর্শনার্থীদের হাতে হাতে মোবাইল শুধুই আনন্দঘন মুহুর্তকে ধরে রাখতে নিজেকে ক্যামেরায় বন্দী করতে সেলফি, আর বন্ধু স্বজন নিয়ে ছবি তুলছেন।
এ সময় মসজিদের মাইকে বার বার ঈদ মোবারক জানিয়ে টিকটক না করার আবেদন জানানো হচ্ছে,  

বাগেরহাটের সুযোগ্য জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসান বলেন,পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়ে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সচেতন রয়েছে। পর্যটকদের বিষয়ে সকলেই অত্যন্ত আন্তরিক।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০  
এক ক্লিকে বিভাগের খবর