বাগেরহাট জেলা মহিলা সংস্থার সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শরীফা খাতুনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা, অবস্থান কর্মসুচী ও স্মারক লিপি প্রদান অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (০৪ সেপ্টেম্বর) সকালে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সচেতন জনতা ও ছাত্র জনতা বাগেরহাটের ব্যানারে প্রতিবাদ সভা ও অবস্থান কর্মসুচী অনুষ্ঠিত হয়। পরে ছাত্র জনতা ও জেলা মহিলা সংস্থার প্রশিক্ষনার্থীরা ৬টি দাবি নিয়ে বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোহাঃ খালিদ হোসেন কাছে স্মারক লিপি প্রদান করেন।
দাবি সমূহ হলো, বাগেরহাট জেলা মহিলা সংস্থার সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শরীফা খাতুনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদরে কাছে তদন্তের আহবান, জেলা মহিলা সংস্থার দূর্নীতিগ্রস্থ ৩ কর্মকর্তা শর্বরী , অপু ও আমেরুনের পদত্যাগ দাবি, প্রশিক্ষনার্থীদের নির্দৃষ্ট অভিযোগ কেন্দ্র থাকতে হবে, প্রশিক্ষনার্থীদের অন্যায়ভাবে যে টাকা নেওয়া হয়েছে তার ফেরত দাবি, তিন প্রশিক্ষক বিথী , প্রতাপ ও নজরুলকে দূর্নীতির পক্ষ না নেওয়ায় অন্যায়ভাবে বদলী করা হয়। অনতিবিলম্বে তাদের বাগেরহাট কার্যালয়ে ফেরত আনা ও প্রতিষ্ঠানটি আবারো যেন কোন দলীয় এবং দূর্নীতিগ্রস্থ লোকের তত্ত¡াবধানে গিয়ে সাধারন মানুষের ক্ষতি না করে। ‘
প্রশিক্ষণার্থীরা জানান, ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান হয়েছেন শরিফা খাতুন। চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে এমন কোনো দুর্নীতি নেই যা তিনি করেননি। নিজের দলের লোকজনকে প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে ভর্তি করানো। ভর্তির জন্য অতিরিক্ত টাকা নেওয়া এবং প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য সরকারের দেওয়া ভাতা কেটে রাখাসহ নানা অনিয়ম করতেন। এটা নিয়ে কেউ কথা বললে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হত।
খাদিজা নামের এক প্রশিক্ষণার্থী বলেন, এখানে যারা প্রশিক্ষণ নিতে আসে তাদের সঙ্গে নানা অনিয়ম করা হয়। ভর্তির জন্য সরকারী নির্ধারিত ১০ টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও তারা ৬শত টাকা নিত। প্রশিক্ষন শেষ হলে আবারো ৬শত টাকা নেওয়া হত। কোন প্রশিক্ষনার্থী অসুস্থতা বা অন্য কোন কারনো অনুপস্থিত থাকে তার টাকাও এরা কেটে রাখত।
রুপা নামের অন্য এক প্রশিক্ষণার্থী বলেন, আমাদের প্রশিক্ষণার্থীদের বাধ্যতামূলক আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে নিয়ে যাওয়া হত। সভা সমাবেশে না গেলে ২ দিনের হাজিরা কেট নেওয়ার হুমকি দিয়ে বাজে ব্যবহার করতেন চেয়ারম্যান শরিফা খাতুন ও শর্বরী। তারা আমাদের মুখ খুলে সভা সমাবেশে যেতে বাধ্য করতেন।
আনোয়ারা বেগম নামের আরেক প্রশিক্ষণার্থী বলেন, এখানে মূলত দুস্থ নারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা থাকলেও, প্রতিটি ব্যাচে বেশিরভাগ প্রশিক্ষণার্থী থাকত শরীফা খাতুনের নিজের লোক ও দলীয় সুপারিশ প্রাপ্ত লোক। এছাড়া প্রশিক্ষণ শেষে সরকারিভাবে পাওয়া প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতা ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন অজুহাতে কেটে রাখা হত। এগুলো নিয়ে কিছু বলার সুযোগ ছিল না আমাদের।
জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন বলেন, জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি নিয়ে বেশকিছু অভিযোগ উঠেছে। সেসব খতিয়ে দেখা হবে। প্রশিক্ষণার্থীদের দাবিগুলো যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে সাবেক চেয়ারম্যান শরিফা খাতুন বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা, ভিত্তিহীন। একটি মহল তাদের নিজস্ব স্বার্থের জন্য ও আমার ভাবমূর্তি ক্ষূন্ন করবার জন্য এ ধরনের অভিযোগ এনেছে। al