বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা সদরে পাচতলা বিশিষ্ট একটি
বাণিজ্যিক ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ঘটনা ঘটেছে। ভবনে থাকা
একটি ক্লিনিকের একজন নারী কর্মচারী নিহত হয়েছেন এবং ফায়ার
সার্ভিসের একজন সদস্যসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। নিহত ওই
নারী উপজেলার কুড়ালতলা কাটাখালী এলাকার দেবু দাসের স্ত্রী অনিতা
বিশ্বাস (৫০)। প্রর্ত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সকাল ৯টার দিকে
উপজেলা সদরের মেইন রোডস্থ মকবুল টাওয়ারের মাইশা প্লাজা নামে ৫ তলা
বিশিষ্ট ওই ভবনে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। মুহূর্তের মধ্যে ভবনের
বিভিন্ন তলায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ভবনটিতে কয়েকটি সোনালী
ব্যাংকসহ ৪ টি ব্যাংক, বীমা, একটি বেসরকারী ক্লিনিক, দোকান ও
প্লাষ্টিকের শোরুম রয়েছে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ , ফায়ার সার্ভিস ও
সেনা সদস্যরা এসে স্থানীয় সাধারন মানুষের সমন্বয়ে আগুন নিয়স্ত্রনে
কাজ করে। ফায়ার সার্বিসের কর্মীরা ভবন থেকে অনিতা রানী দাস
নামের এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেন। এ ছাড়া আহত অবস্থায় ২৫ থেকে ৩০
জনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এবং বিভিন্ন হাসপাতালে
পাঠানো হয়েছে। বানিজ্যীক ভবনে আগুন লাগা ও অসংখ্য মানুষ আটকে
পড়ার খবর পেয়ে বাগেরহাটের সুযোগ্য জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসান
ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
বাগেরহাট পুলিশ অফিসের মিডিয়া সেলের
পরিদর্শক কাজী শাহিদুজ্জামান বলেন, ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট,
চিতলমারী উপজেলার অস্থায়ী ক্যাম্পের সেনাবাহিনী সদস্যরা, পুলিশ এবং
স্থানীয় লোকজন চেষ্টা করে দুপুর ১২টার দিকে আগুন সম্পূর্ণ
নিয়ন্ত্রণে আনে। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি আরো জানান, চিতলমারী
উপজেলার প্রাণ কেন্দ্র মেইন রোডে মাইশা প্লাজা। পঞ্চম তলা বিশিষ্ট
এই প্লাজায় বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে
সোনালী ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, বীমা কোম্পানি,
বেসরকারী একিট ক্লিনিক, দোকান-শোরুম রয়েছে। সকাল ৯টার
দিকে স্থানীয়রা প্লাজা থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখতে পান। মুহূর্তের
মধ্যে ভবনের বিভিন্ন তলায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
এ সময় ওই ভবনে থাকা নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ ভবেনের
ছাদে চলে যায় এবং আটকা পড়ে । পরে তাদেরকে উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে
ধোঁয়ার কারণে নারী, শিশুসহ বেশ কয়েকজন মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন।
তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাগেরহাট ফায়ার
ব্রিগেড ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো.
শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘খবর পেয়ে বাগেরহাট, খুলনা, চিতলমারী,
মোল্লাহাট এবং টুঙ্গিপাড়ার ৮টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে অংশ
নেয়। দীর্ঘ সময় চেষ্টা চালিয়ে বেলা ১২টার দিকে তারা আগুন
নিয়ন্ত্রণে আনেন। ভবন থেকে মধ্য বয়সী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
৫তলা বিশিষ্ট ওই বাণিজ্যিক ভবনটির নীচের মার্কেট থেকে
সর্টসার্কিটের মাধ্যমে আগুনের সুত্রপাত হয়েছে বলে প্রথামিকভাবে
জানা গেছে। বানিজ্যীক ভবনে আগুন লাগা ও অসংখ্য মানুষ আটকে
পড়ার খবর পেয়ে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসান
ঘটনাস্থলে যান। তিনি বলেন, একজন নারী নিহত ও ২৫/৩০ মানুষ
হুড়োহুড়িতে এবং আগুনের ধোয়ায় আহত হয়েছেন। আগুনে ওই ভবনে
থাকা ব্যাংকের কোনো ক্ষতি হয়নি। ফায়ার ব্রিগেড, সেনাবাহিনী,
পুলিশ এবং স্থানীদের সহযোগিতায় দ্রæত আগুন সম্পূর্ণভাবে
নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।#