বাগেরহাটে তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত,
বাড়ছে শীত জনিত রেগির সংখ্যা
এস এম রাজ,বাগেরহাট প্রতিনিধি:
বাগেরহাটে তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত, বাড়ছে শীত জনিত রেগির সংখ্যা।
সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি ভুগছে। ঠাণ্ডার
প্রকোপ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শীতজনিত রোগের সংখ্যাও দিন দিন বৃদ্ধি
পাচ্ছে। ভোর থেকে চারদিকে ঘন কুয়াশা আর ঠাণ্ডা বাতাসে খেটেখাওয়া মানুষের
ভোগান্তি চরমে। বাগেরহাটে শনিবার (৪ জানুয়ারি) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩.৮
ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে, যা এ মৌসুমের সর্বনিম্ম। বাগেরহাট সদর
হাসপাতালে শ্বাসকষ্টসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি
পেয়েছে। গত দুই দিনে (বৃহস্পতিবার-শুক্রবার) প্রায় শত জন শ্বাসকষ্টের
রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে সদর হাসপাতালে বিভিন্ন বিষয়ে ডাক্তার সংকট
থাকায় রোগীর ¯^জনরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছে রোগীর
¯^জনরা। অনেকেই চিকিৎসা না পেয়ে বাধ্য হয়ে বেসরকারি ক্লিনিকে যাচ্ছেন।
মোংলা আবহাওয়া পর্যবে¶ণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হারুন
অর-রশিদ জানান, শনিবার বাগেরহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি
সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। মোংলা আবহাওয়া পর্যবে¶ণ কেন্দ্র আরও
জানিয়েছে, কুয়াশার কারণে সূর্যের দেখা মিলছে না, ফলে শীতের তীব্রতা
বাড়ছে। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে তেঁতুলিয়ায় ৮.৩ ডিগ্রি
সেলসিয়াস।
শীতের তীব্রতায় দিনমজুর ও ছিন্নমূল মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।
সকাল-বিকেল কাজ করতে না পারায় তাদের আয় কমে গেছে। অনেকেই খড়কুটা জ্বালিয়ে
শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।
ঠাণ্ডার কারণে শিশু ও বৃদ্ধদের সর্দি, কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগ
বেড়েছে। বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে ২৫ শতাংশ
ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত বলে জানিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার
সমদ্দার।
বোরো ধানের বীজতলা র¶ায় কৃষকদের সন্ধ্যায় পানি ঢেলে সকালে তা বের করার
পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। তবে এখনো বীজতলার বড় ধরনের ¶তির খবর পাওয়া
যায়নি।
সদর হাসপাতালের এক অসুস্থ শিশুর মা সুমি বেগম জানান, “আমার সন্তানের
শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল, আমি গতকাল আমার বাচ্চা নিয়ে আসছি। ভিতরে রোগীর
চাপ থাকায় আমার বাচ্চাকে বাড়ান্দায় রাখতে বাধ্য হয়েছি।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের জুনিয়র কনসাল্টেশন (শিশু) ডাঃ খান শিহান মাহমুদ
দৈনিক উত্তাল কে বলেন, গত কয়েকদিনের তীব্র শীতে বাচ্চারা সবথেকে বেশী ঝুকির
মধ্যে আছে। ঠান্ডাজনীত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক শিশু এখানে ভর্তি
হচ্ছে। আমি আমার সাধ্যমত সেবা প্রদান করে যাচ্ছি। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া
শিশুদের বাহিরে না যাওেয়ার উপর জোর দেন এ চিকিৎষক।
সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ অসীম কুমার সমদ্দার দৈনিক উত্তাল কে বলেন,
শীতে সর্দি, কাশি, ব্রঙ্কিওলাইটিস ও এজমার প্রকোপ বাড়ছে। চর্মরোগ ও
ডায়ারিয়াও বাড়ছে। শিশুদের ঠাণ্ডা থেকে দূরে রাখতে হবে। গরমের কাপড় পরিধান
করাতে হবে। বিশুদ্ধ পানি খেতে হবে। নাক দিয়ে পানি আসলে নরমাল স্যালাইন
দিয়ে নাক পরিষ্কার করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এন্টিহিস্টামিন ও
এন্টিবায়োটিক খাওয়া যাবে না। শ্বাসকষ্ট হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী
ওষুধ খাওয়াতে হবে বলেও জানান ¯^াস্থ্য বিভাগের এ কর্মকর্তা।#