বলা হয়ে থাকে, টেস্ট ক্রিকেট ক্ষণে ক্ষণে রং পাল্টায়। বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির পার্থ টেস্ট তার দারুণ এক উদাহরণ। পার্থে প্রথম ইনিংসে রাজত্ব করেছেন পেসাররা। ভারতকে অল্পরানে গুটিয়ে সুবিধা করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়াও। দ্বিতীয় ইনিংসে অজি বোলারদের নাস্তানাবুদ করে রানপাহাড় গড়েছে জাসপ্রীত বুমরাহর দল। বিরাট কোহলি ও যশস্বী জয়সওয়ালের সেঞ্চুরিতে ৫৩৪ রানের লক্ষ্যে দিয়েছে স্বাগতিকদের। লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ভারতের বোলারদের তোপে ২৩৮ রানে গুটিয়ে যায় অজিরা। তাতে ২৯৫ রানের ঐতিহাসিক জয়ে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির সিরিজে ১-০ এগিয়ে রইল ম্যান ইন ব্লুরা।”
অস্ট্রেলিয়া অতীতে চতুর্থ ইনিংসে সফলভাবে ৪০৪ রান তাড়া করে জিতেছে। লিডসে ১৯৪৮ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ম্যাচ জিতেছিল অজিরা। ভারতের বিপক্ষে পার্থে তেমনটা পারল না কামিন্সের দল। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাস বলছে এতদিন সবচেয়ে বেশি ৪১৮ রান তাড়া হয়েছে। বর্ডার গাভাসকর ট্রফির প্রথম টেস্ট জয়ের জন্য ভারত অজিদের লক্ষ্য দিয়েছিল ৫৩৪ রানের। কামিন্সের দল সেখানে থামল ২৩৮ রানে। যার ফলে ২৯৫ রানের ব্যবধানে বড় জয় ভারতের। তাতে দীর্ঘ ১৬ বছর পর পার্থে টেস্ট জয় কোহলি-রাহুলদের।”
এদিকে অজিদের বিপক্ষে পার্থ টেস্ট জয়ে ৪৬ বছরের পুরোনো রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে ভারত। অস্ট্রেলিয়ার মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টে ভারতের সবচেয়ে বেশি ব্যবধানে জয়ের কীর্তি এটাই। এর আগে ১৯৭৮ সালে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ভারত ২২২ রানে হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়াকে।”
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেও জোর ধাক্কা খায় অস্ট্রেলিয়া। তৃতীয় দিনের শেষেই বুমরাহ ও সিরাজের দাপটে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। স্কোর ছিল ১২ রানে ৩ উইকেট। চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনে দুরন্ত পারফরম্যান্স ভারতীয় বোলারদের। উসমান খোয়াজা ও স্টিভ স্মিথের উইকেট নেয় ভারতীয় দল। চতুর্থ দিনের মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ১০৪ রানে ৫ উইকেট।”
অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসে কিছুটা লড়াই করেন ট্রেভিস হেড। অর্ধশতরান করেন তিনি। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ট্রাভিস হেড ও মিচেল মার্শ ৮২ রান যোগ করেন। দ্রুত রান তুলছিলেন হেড। এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। কিন্তু বুমরাহ তাকে ফিরিয়েই এই জুটি ভাঙেন। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেয়ার আগে ১০১ বলে ৮ চারে ৮৯ রান করেন হেড। “
হেডের বিদায়ের কিছুক্ষণ পর মার্শও বিদায় নেন। নিতিশ কুমারের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৬৭ বলে ৩ চার ও ২ ছয়ে ৪৭ রান করেন মার্শ। শেষদিকে অ্যালেক্স ক্যারি একাই লড়ে যান। তাতে অবশ্য বড় হার এড়াতে পারেনি তার দল। শেষ ব্যাটার হিসেবে হারশিত রানার বলে আউট হওয়ার আগে ৩৬ রান করেন ক্যারি।”
প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট পাওয়া বুমরাহ দ্বিতীয় ইনিংসে নেন ৩ উইকেট। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৮ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরার পুরস্কার পেয়েছেন পার্থে ভারতের অধিনায়ক বুমরাহর হাতে।”sk